এক
কিউবার বিপ্লব কি সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ছিল? এটা কি সমাজতান্ত্রিক আদর্শ দ্বারা উদ্বুদ্ধ ছিল? এই বিপ্লব কি মার্কসবাদ-লেনিনবাদের সূত্রায়িত সমাজ বিকাশের নিয়ম মেনে হয়েছিল? এর পিছনে কি কম্যুনিস্ট পার্টি যুক্ত ছিল?
এই যে এক গাদা প্রশ্ন করলাম আমি, এর সবগুলো প্রশ্নের উত্তরই হচ্ছে ‘না’।
কিউবার বিপ্লব অনেকটা আকস্মিক ঘটনা। কয়েকজন সাহসী মানুষের উপর ভিত্তি করে এই বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। কিউবার বিপ্লবে বিবদমান দুটো অংশ ছিলো। বাতিস্তার স্বৈরশাসন অবসানের জন্য সশস্ত্র যুদ্ধে নেমেছিল ফিদেল ক্যাস্ট্রোর নেতৃত্বাধীন ‘২৬শে জুলাই আন্দোলন‘ নামের সংগঠন। এই সংগঠনে কম্যুনিস্টরা সেভাবে প্রকাশ্যে ছিলো না। দুই একজন বিচ্ছিন্নভাবে থাকলেও এই আন্দোলনের পিছনে কম্যুনিস্ট আদর্শের কোনো ভূমিকা ছিলো না।
ফিদেল কাস্ট্রো নিজেও কম্যুনিস্ট ছিলেন না। এই সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিলো বাতিস্তাকে সরিয়ে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সংস্কার করা। পুরো আর্থ-সামাজিক কাঠামোকে পরিবর্তন করে ফেলতে হবে, এরকম কোনো সমাজতান্ত্রিক বৈপ্লবিক আদর্শ নিয়ে তাঁরা যুদ্ধে নামেনি। এই বিবেচনায় এই বিপ্লব বা সশস্ত্র যুদ্ধ মূলত জাতীয়তাবাদী এক যুদ্ধ। সরকার পরিবর্তনের লড়াই ছাড়া, এর পিছনে মহান কোনো উদ্দেশ্য ছিলো না।
বাতিস্তা গণতন্ত্রকে হত্যা করে যে একনায়কতন্ত্র গড়ে তুলেছে, সেটাকে পরাস্ত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাই ছিলো এর একমাত্র লক্ষ্য। একে মহান সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব হিসাবে আখ্যায়িত করাটা একটা ভুল সিদ্ধান্ত, সত্যের অপলাপ মাত্র। কাস্ত্রো নিজেও উল্লেখ করেছিলেন যে কিউবার জনগণকে মুক্ত করা এবং তাদের সামাজিক ন্যায়বিচার দেওয়াটাই তাঁর মূল লক্ষ্য।
এই আন্দোলনের সাথে জনগণের সম্পৃক্ততা শুরু দিকে একেবারেই ছিলো না বলা চলে। শেষের দিকে যদিও বা অনেক কৃষক ফিদেল ক্যাস্ট্রোর বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন। তবে, এটার জন্য বাতিস্তাই দায়ী। তাঁর ভুলে এই কাণ্ড ঘটেছিলো। কৃষকরা ফিদেল ক্যাস্ট্রোকে আশ্রয় দিচ্ছে, এই অভিযোগে এদেরকে বাসস্থান থেক উচ্ছেদ করেন তিনি। এরাই পরে বাতিস্তার বিরুদ্ধে ক্ষোভের কারণে দলে দলে যোগ দিয়েছে বিপ্লবী আর্মির সাথে।
ক্যাস্ট্রো যখন ক্ষমতা দখল করেন, সেই সময়টাতে কম্যুনিস্টরা সাধারণ জনগণের কাছে মোটেও প্রিয় মানুষ ছিলো না। তারা বাতিস্তার বিরুদ্ধে ক্যাস্ট্রোর এই বিপ্লবে প্রকাশ্যে সমর্থন জানায়নি। ফিদেল ক্যাস্ট্রোর ওরিয়ন্তেতে প্রদেশে আসার আগে ১৯৫৮ সালের পর্যন্ত এদের বরং অনেক বেশি দহরম-মহরম ছিলো স্বৈরশাসক বাতিস্তার সাথেই। তাদের ধারণা ছিলো যে বাতিস্তা তাদের কোলে টেনে নেবে, যেমন তিনি নিয়েছিলেন তাদের বেশ কয়েক বছর আগে। ১৯৪০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছিলেন বাতিস্তা। সেই সময় তিনি কম্যুনিস্ট পার্টিকে তাঁর কাছে টেনে নেন বন্ধু হিসাবে এবং কিউবার লেবার আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণ করতে দেন। তিনি তাঁর মন্ত্রীসভায় দুজন স্বনামখ্যাত কম্যুনিস্টকেও জায়গা দেন।
সিয়েরো মায়েস্ত্রাতে ফিদেল ক্যাস্ট্রো যখন বাতিস্তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে খুব একটা সুবিধা করতে পারছিলো না, তখন কম্যুনিস্টরা তাঁকে পেটি বুর্জোয়া বা পুৎসিস্ট বলেও ডেকেছে। পুৎসিস্ট মানে হচ্ছে হারু পার্টি। হিটলার শুরুর দিকে যখন হারতো, তখন তাঁকে ব্যঙ্গ করে বিপক্ষ এই নামে ডাকতো। সেই সময় কম্যুনিস্ট পার্টির অফিসিয়াল অবস্থান ছিলো এরকম যে, ফিদেল কাস্ট্রো অস্ত্রের মাধ্যমে বাতিস্তাকে উচ্ছেদের যে পরিকল্পনা করছে সেটা সফল হবে না। এর বদলে শ্রমিক শ্রেণীর ধর্মঘট, বিক্ষোভ বা অন্যান্য গণ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমেই সম্ভব হবে।
১৯৫৮ সালের এপ্রিল মাসে বাতিস্তা সরকারের পতনের উদ্দেশ্যে সাধারণ ধর্মঘট ডাকে ফিদেল কাস্ট্রো। সশস্ত্র পন্থাতে তাদের সমর্থন ছিলো না ভালো কথা, কিন্তু নিয়মতান্ত্রিক এই আন্দোলনেও তারা সহযোগিতার হাত বাড়ায় না, বরং এই আন্দোলনের পিছন থেকে ছুরি মেরেছে তারা। সপ্তাহখানেক পরেই কম্যুনিস্ট পার্টি বিদ্রোহীদের উদ্দেশ্যে লিফলেট ছাড়ে। সেই লিফলেটে তারা বিদ্রোহীদের জানায় যে এই ধর্মঘট ব্যর্থ হয়েছে কারণ ২৬শে জুলাই মুভমেন্ট কম্যুনিস্ট পার্টির সাথে যৌথ ফ্রন্ট তৈরি করতে অস্বীকার করেছে। সেই একই লিফলেটে দাবি করা হয় যে, শুধুমাত্র কম্যুনিস্ট সমর্থন পেলেই সাধারণ ধর্মঘট সফল হতে পারে, নতুবা না।
এই সম্পূর্ণ ব্যর্থ সাধারণ ধর্মঘটের কারণে বহু বিপ্লবীকে প্রাণ দিতে হয়। কিন্তু, মজার বিষয় হচ্ছে, এর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কম্যুনিস্টরা উপলব্ধি করা শুরু করে যে পাশার দান পাল্টে গিয়েছে। বাতিস্তা আর বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকবে না। তখন তারা বিপ্লবীদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে প্রচেষ্টা নেয়। তারা তাদের সেরা লোক রাফায়েল রড্রিগেজকে পাঠায় ক্যাস্ট্রোর বিদ্রোহীদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাতে।
বাতিস্তার বিরুদ্ধে বিপ্লবে কম্যুনিস্টদের ভূমিকা বিতর্কিত। মেক্সিকোতে ফিদেল ক্যাস্ট্রো যখন ছিলেন, তিনি কম্যুনিস্ট এজেন্টদের সক্রিয় সাহায্য পেয়েছেন বলেই ধরে নেওয়া যায়। তার বাহিনীতে যোগ দেওয়া চে গুয়েভারাও কম্যুনিস্ট ছিলেন। আগেই উল্লেখ করেছি যে কম্যুনিস্ট পার্টি সেই সময় কিউবাতে খুবই অ-জনপ্রিয় ছিলো।
এগুলোকে বিবেচনা নিয়ে বলা যায়, এরাই হয়তো ফিদেল ক্যাস্ট্রোকেও এদের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতেই পরামর্শ দিয়েছে। তা না হলে কিউবার জনগণের সমর্থন হারাতে পারেন তিনি। সিয়েরা মায়েস্ত্রাতে লাল পতাকা নিয়ে কম্যুনিস্টরা বাতিস্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলে, কিউবান বিপ্লব আর সংঘটিত হতো না। জনগণের সমর্থন ফিদেল ক্যাস্ট্রো শুধুমাত্র এই কারণেই পেয়েছিলেন যে, তিনি কিউবানদের মুক্তির জন্য এবং সাংবিধানিক সরকারের জন্য সংগ্রাম চালাচ্ছেন।
রড্রিগেজের ফিদেল ক্যাস্ট্রোর হেডকোয়ার্টারে যাবার অনেক আগে থেকেই সিয়েরা মায়েস্ত্রাতে ছোট-খাটো কম্যুনিস্টরা ফিদেল ক্যাস্ট্রোর বাহিনীতে যে ছিলো না তা নয়। তবে, এটা বলা যায় যে বাতিস্তার পতনের সময়ে বিপ্লবী আর্মির বেশিরভাগ অফিসার এবং সৈন্যই অ-কম্যুনিস্ট ছিলো। বেশিরভাগ সৈন্যই ছিলো অশিক্ষিত এবং ধর্মীয় বিশ্বাসে বিশ্বাসী কৃষক। তাঁর বাহিনীতে চ্যাপলেইন ছিলো, ছিলো ক্যাথলিক খৃস্টানদের একটা গ্রুপও।
ফিদেল ক্যাস্ট্রোর বিপ্লবে কম্যুনিস্টরা গা বাঁচিয়ে চললেও, বিপ্লবের পর পরই মধু খেতে নেমে পড়ে তারা। কম্যুনিস্ট পার্টি অ-জনপ্রিয় ছিলো ঠিকই, কিন্তু সেই সময়ে এর মতো সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক দল কিউবাতে আর দ্বিতীয়টা ছিলো না। বাতিস্তার পতনের মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হাভানার কম্যুনিস্ট পার্টি যে সব রাজনৈতিক দল বাতিস্তাকে সমর্থন করেছিলো, তাদের সবগুলোর অফিস দখল করে এবং সাইনবোর্ড পাল্টে নিজেদের নাম লাগিয়ে দেয়।
অন্যান্য বিশেষ কিছু লেখা-
বিপ্লবী আর্মি এবং লেবার ইউনিয়নেও ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে তারা। আর্মিতে তাদের সমর্থনের জন্য চে গুয়েভারা ছিলো। লেবার ইউনিয়নে ঢোকাটা একটু কষ্টের ছিলো। কারণ এর দায়িত্ব ফিদেল দিয়েছিলেন তাঁর ২৬শে জুলাই মুভমেন্টের হাতে। এর নেতারা প্রায় সকলেই এন্টি-কম্যুনিস্ট ছিলেন।
দুই
উপরেই আমি উল্লেখ করেছি যে, ফিদেল ক্যাস্ট্রোর নেতৃত্বে ১৯৫৯ সালে কিউবাতে যে বিপ্লব হয়েছিলো, সেটা কোনো সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ছিলো না। যদিও পরবর্তীতে এর হাত ধরেই কিউবাতে সমাজতন্ত্র এসেছে। কিন্তু, এই আন্দোলন যখন শুরু হয় তখন এটি একটি সরকার পতনমূলক সশস্ত্র আন্দোলন ছিলো। স্বল্প সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী এবং ভাড়াটে সৈন্য দিয়ে স্বৈরশাসক বাতিস্তাকে উচ্ছেদ করে কিউবাতে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করাই ছিলো এই আন্দোলনের উদ্দেশ্যে।
এই হিসাবে এটি একটি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন নয়। সে কারণে, সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব বলতে যা বোঝায়, সেটার মাঝে এই বিপ্লব পড়ে না। ফিদেল ক্যাস্ট্রো নিজেও কখনো সমাজতন্ত্র কায়েমের কথা বলেননি এই আন্দোলন চলাকালীন সময়ে। তিনি সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের স্বপ্ন দেখতেন, সেরকম কিছুও আমরা কখনো দেখি না। এই আন্দোলন যে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের জন্য করা হচ্ছে সেরকম কোনো ম্যানিফেস্টোও ফিদেল ক্যাস্ট্রো কখনো প্রচার করেননি।
লোকজনকে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করে তোলার প্রচেষ্টা এবং তাদের বিপ্লবে অংশ নেওয়ানোর কার্যক্রমও তাঁর কাছ থেকে বা তাঁর কমান্ডারদের কাছ থেকে দেখা যায় না। কোনো বামপন্থী দল এই আন্দোলনের পিছনে সক্রিয় ছিলো এমন খবরও আমাদের কাছে আসে না। বিচ্ছিন্ন একটা সশস্ত্র দল রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে রাখা একজন স্বৈরাচারকে গদি থেকে নামাতে চাচ্ছে, এর বেশি কিছু কেউ এখানে দেখাতে পারবে বলে মনে হয় না।
এ কারণে এই আন্দোলনের সৈনিকদের আদর্শিক অবস্থা যে দুর্বল ছিলো, সেটা চে গুয়েভারার লেখা থেকেই জানা যায়। সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবে অংশ নেওয়া সৈনিকদের আদর্শিক অবস্থান প্রচণ্ড রকমের শক্তিশালী হবে, এটাই প্রত্যাশিত।
কিন্তু, ক্যাস্ট্রোর সৈন্যদের মধ্যে তা হয়নি। এরা নানা ছুতোয় যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যেতো, কেউ গুপ্তচর হিসাবে সব কথা ফাঁস করে দিতো বাতিস্তার আর্মির কাছে কেউ বা আবার আদেশের অবাধ্য হতো। এদেরকে অবাধ্যতার কারণে ফায়ারিং স্কোয়াডে পাঠানোর কথাও লিপিবদ্ধ হয়ে আছে। চে গুয়েভারা এই আদর্শিক দুর্বলতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন,
আমাদের দলের মধ্যে তখনও কোন সংহতি ছিল না, ছিল না আদর্শের গভীরতা যাতে বিদ্রোহীরা এই কঠিন কঠোর জীবনের যন্ত্রণা সহ্য করার মতন মানসিকতা অর্জন করবেন। দলত্যাগীদের সংখ্যাও কম ছিল না, তার উপর অনেকেই চাইতেন শহরে যেন তাদের কোন না কোন কাজ দেওয়া হোক।
আন্দোলনের রাজনৈতিক স্বরূপ কি তার প্রথম ঘোষণা আসে ১৯৫৭ সালে। সিয়েরা মায়েস্ত্রা থেকে ঘোষিত সেই রাজনৈতিক ঘোষণায় ক্যাস্ট্রো বলেন, আগেকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এক বছর শেষেই সাধারণ নির্বাচন দেবেন। সেই সাথে তিনি তথ্য এবং সংবাদপত্রের অবাধ স্বাধীনতা দেবার ও ১৯৪০ সালের কিউবার সংবিধানে নিশ্চিত করা ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক অধিকার সুনিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন। ক্যাস্ট্রোর এই রাজনৈতিক ঘোষণার কোথাও কিন্তু সমাজতন্ত্রের সামান্যতমও গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে না। এগুলো সবই গণতান্ত্রিক সমাজের বৈশিষ্ট্য এবং চাহিদা।
একই বছরের শেষের দিকে ফিদেল ক্যাস্ট্রো মায়ামির কিউবান লিবারেশন কাউন্সিলকে একটা চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে তিনি বলেন,
The ‘prime duty’ of a post-Batista provisional government should be the celebration of general elections within a year and the right of all political parties and groups, even during the tenure of the provisional government, to put forward programs, organize themselves, and participate in a general election under the provisions of the 1940 Constitution and the Electoral Code of 1943.
পাঠক, নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে যদি দেখেন, তবে দেখবেন যে, এগুলো সবই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য। ক্যাস্ট্রো সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালালে নির্বাচনের মতো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে মাথা ঘামাতেন না কিছুতেই।
এখানেই শেষ নয়। পরের বছরের (১৯৫৮) ফেব্রুয়ারি মাসে করোনেট ম্যাগাজিনে একটা প্রবন্ধ লেখেন ফিদেল ক্যাস্ট্রো। সেখানে তিনি মায়ামির লিবারেশন কাউন্সিলকে লেখা চিঠির বক্তব্যই পুনর্ব্যাক্ত করেন। সেই সাথে একই প্রবন্ধে তিনি সমাজতন্ত্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস, জাতীয়করণের বিপক্ষে অবস্থান নেন। তিনি লেখেন,
I personally have come to feel that nationalization is, at best a cumbersome instrument. It does not seem to make the state any stronger, yet it enfeebles private enterprise. Even more importantly, any attempt at wholesale nationalization would obviously hamper the principal point of our economic platform – industrialization at the fastest possible rate. For this purpose, foreign investments will always be welcome and secure here.
ক্যাস্ট্রোর উপরোক্ত বক্তব্য একজন বুর্জোয়া রাজনীতিবিদের বক্তব্য হবার কথা, একজন মহান বিপ্লবী, যিনি সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের প্রায় দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছেন, তাঁর মুখে এই সব ধনতান্ত্রিক কথামালা বড্ড বেখাপ্পা ঠেকে। শিকাগো ট্রিবিউনের সাথে সাক্ষাৎকারেও তিনি শিল্প-কলকারখানাকে সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নেবার কথা অস্বীকার করেন এবং বলেন যে, এ সমস্ত নির্বোধ কথাবার্তা উঠছে আমাদের বিপ্লবের ভয় থেকে।
অন্যান্য পর্বগুলো পড়ুন এখানে ⇑